হেফাজতে ইসলামের ১২ দফা দাবি: শেখ হাসিনার বিচারসহ কঠোর বার্তা সোহরাওয়ার্দী সমাবেশে

জাতীয় নির্বাচনের পূর্বমুহূর্তে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করে সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার চিহ্নিত দোসরদের বিচারের দাবি তুলে সংগঠনটি মোট ১২ দফা দাবি পেশ করে। শনিবার (৩ মে) আয়োজিত এই সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক এসব দাবি উত্থাপন করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। এতে দেশব্যাপী থেকে আগত শীর্ষ আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাশিক্ষক, ছাত্র এবং ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
হেফাজতের পেশকৃত ১২ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও তার কোরআনবিরোধী প্রতিবেদন বাতিল করে ধর্মপ্রাণ নারীদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন কমিশন গঠন, সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন এবং এলজিবিটি ও ট্রান্সজেন্ডার স্বীকৃতির পাঁয়তারা বন্ধ, ২০১৩ সালের ৫ মে’র শাপলা চত্বর ও জুলাই আন্দোলনের শহীদদের বিচার নিশ্চিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের দাবি, আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং তাদের কার্যক্রম বন্ধ, আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-এর নামে কটূক্তিকারীদের জন্য কঠোর আইন এবং ধর্মীয় অবমাননাবিরোধী সুপারিশ বাতিল, শহীদ সাইফুল ইসলাম হত্যার উসকানিদাতা চিন্ময় দাসের জামিন বাতিল ও বিচার, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আলেম-ওলামা ও ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, গাজা ও ভারতের মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে কূটনৈতিক অবস্থান জোরদার এবং ইসরায়েলি-ভারতীয় পণ্যের বয়কট, শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, রাখাইন করিডোর চুক্তি থেকে সরে আসা, পার্বত্য চট্টগ্রামে মিশনারি তৎপরতা বন্ধ এবং দাওয়াতি কাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ও কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ মুসলমান, অথচ ইসলাম ও আলেম-ওলামাদের প্রতি সরকারের আচরণ চরম বৈরী। জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিকে উপেক্ষা করে সরকার একটি অপসংস্কৃতি ও ধর্মহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার পাঁয়তারা করছে। তাই হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে ১২ দফা দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
মাওলানা মাহফুজুল হক তার বক্তব্যে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের গণহত্যা ও জুলাই আন্দোলনে নিহত সব শহীদদের স্মরণ করেন এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। সেইসঙ্গে আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের দ্রুত সুস্থতা ও পুনর্বাসনের দাবিও জানান।