পাকিস্তান ও ভারতের আকাশপথ বন্ধ: আঞ্চলিক উত্তেজনা ও অর্থনৈতিক ক্ষতি

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার ফলে আকাশপথে বিমান চলাচলে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে, যা দুই দেশকেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। গত মাসে ভারতীয় কাশ্মীরে পেহেলগামে হামলার পর, পাকিস্তান ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য তার আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় এবং ভারতও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানের বিমান সংস্থাগুলোর জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়।
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুক হামলায় ২৬ জন নিহত হলে, ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং এর পরপরই নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ একে অপরের আকাশপথ বন্ধ করে দেয়। এর ফলস্বরূপ, ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপে ফ্লাইট চলতে গিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে, যা সময় এবং খরচ বাড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্যে যেতে ভারতীয় বিমানগুলো গড়পড়তা এক ঘণ্টা বেশি উড়ছে, যার ফলে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ হচ্ছে এবং যাত্রীদের আর্থিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
পাকিস্তানও আকাশপথে নিষেধাজ্ঞার কারণে বিপদে পড়েছে। ইউরোপীয় বিমান সংস্থাগুলো যেমন লুফথানসা, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, এয়ার ফ্রান্স, আইটিএ, এলওটি ইত্যাদি পাকিস্তানের আকাশপথ এড়িয়ে চলছে, এতে তাদের আকাশপথের আয় কমে গেছে এবং পাকিস্তান বছরে প্রায় ৬০ কোটি ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোও পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করতে না পেরে মাসে ৭ থেকে ৮ কোটি ডলার অতিরিক্ত খরচ করছে, যা তাদের আর্থিক চাপ বাড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতি শুধু বিমানের চলাচলকেই প্রভাবিত করছে না, বরং উভয় দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সম্পর্কের উন্নয়নেও ক্ষতি করছে।
২০১৯ সালে যখন ভারত পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বালাকোটে সন্ত্রাসী ক্যাম্পে বিমান হামলা চালিয়েছিল, তখনও পাকিস্তান আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছিল, এবং ৫ মাসে অন্তত ১০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছিল। বর্তমানে চলমান এই নিষেধাজ্ঞা দুটো দেশের সম্পর্কের উত্তেজনা ও নিরাপত্তা উদ্বেগকে আরও তীব্র করে তুলছে, তবে বাস্তবতা হলো, উভয় দেশই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, যা তাদের ভবিষ্যত সম্পর্কের জন্য এক ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।