পুতিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা, লক্ষ্য মানবিক বার্তা

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের মধ্যেই অবশেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। খ্রিস্টানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ‘ইস্টার সানডে’ উপলক্ষে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। যুদ্ধবিরতিটি কার্যকর হবে শনিবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে চলবে সোমবার (২১ এপ্রিল) মধ্যরাত পর্যন্ত।
ক্রেমলিনের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই সময় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া কোনো ধরনের সামরিক হামলা চালাবে না। মানবিক দিক বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুতিন। তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করি ইউক্রেনও যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে এবং ইস্টারের সময় হামলা থেকে বিরত থাকবে।”
পুতিন নির্দেশ দিয়েছেন, রুশ সেনারা যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমস্ত সামরিক কার্যক্রম বন্ধ রাখে। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, ইউক্রেন যদি এই যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে বা কোনো উসকানিমূলক পদক্ষেপ নেয়, তাহলে রাশিয়ার সেনারা পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় প্রস্তুত থাকবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, পুতিন সরাসরি তার সেনাদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন যুদ্ধবিরতির সময় কোনো আক্রমণ না করা হয়। তবে ইউক্রেন এখনো এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। দেশটির কিছু কর্মকর্তারা এই যুদ্ধবিরতিকে ‘কৌশলগত ছলনা’ হিসেবে দেখছেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক হামলা শুরু করে রাশিয়া। শুরুর দিকে দ্রুত কিয়েভ দখলের লক্ষ্য থাকলেও তা ব্যর্থ হয়। বর্তমানে যুদ্ধ মূলত লুহানেস্ক ও দোনেৎস্ক অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত, যেখানে রাশিয়া ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণার মধ্য দিয়ে পুতিন আন্তর্জাতিক মহলের কাছে মানবিক অবস্থান তুলে ধরতে চাইছেন। একই সঙ্গে এটি হতে পারে যুদ্ধের পরবর্তী ধাপের জন্য সেনাদের পুনর্গঠন ও প্রস্তুতির কৌশলও।