শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫ | জ্যৈষ্ঠ ২, ১৪৩২

শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
জ্যৈষ্ঠ ২, ১৪৩২

আবরার ফাহাদ হত্যা: হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ, ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড

শাহাদত হোসেন

প্রকাশিত: ২০২৫-০৫-০৩ ১৮:৪০:০১

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। গত ১৩১ পৃষ্ঠার রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।

২০২৪ সালের ১৬ মার্চ, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন, যা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের জন্য অপরিহার্য আইনগত পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর, বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী নির্মমভাবে হত্যা করে। আবরার ফাহাদ, যিনি বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন, ফেসবুকে ভারতবিরোধী একটি পোস্ট দেয়ার কারণে ওই হামলার শিকার হন।

হত্যাকাণ্ডের পর আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ চকবাজার থানায় ৭ অক্টোবর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, এবং ৩৭ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষে ১৩ নভেম্বর মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর, বুয়েটের ২০ জন শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড এবং আরও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়, যার ফলে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের ঘোষণা আসে। এটি ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বড় আন্দোলনের সূচনা, যা দেশব্যাপী সরকার বিরোধী উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল।

হাইকোর্টের এই রায়ের পর, আবরার ফাহাদের হত্যার জন্য দায়ী ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখার পাশাপাশি, চলমান প্রতিবাদ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ এবং এর পরবর্তী রাজনৈতিক প্রভাবও এক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে।

এদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের পর, আবরার ফাহাদের নাম বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠে, এবং তার হত্যার বিচারিক কার্যক্রমে সবার মনোযোগ আকর্ষিত হয়েছে।

বর্তমানে, আবরার ফাহাদের মৃত্যু তার পরিবারের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হলেও, আদালতের রায় দেশের বিচার ব্যবস্থার শক্তিশালী অবস্থানকে আরো দৃঢ় করেছে।

SStv